১+১= ২। কোনদিন কি ৩ হবে? না হবেনা। কিছু জিনিস সবসময় ফিক্সড থাকবে। বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় গণিত অংশ ও ফিক্সড। এখানে নম্বর তুলা সহজ। বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি (গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা) জানতে পুরো আর্টিকেল পড়ুন।
সূচীপত্র |
বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি (গাণিতিক যুক্তি) সিলেবাস প্রস্তুতি কৌশল বুকলিস্ট |
বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি (মানসিক দক্ষতা) সিলেবাস প্রস্তুতি কৌশল বুকলিস্ট |
প্রথমে বিসিএস লিখিত সিলেবাস ভালোভাবে দেখে লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি শুরু করতে হয়।
বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় গণিতে আন্সার করে খুব কম। সব প্রার্থীরা গণিত ভয় পায়।
আপনার জেতার চান্সটা হল কিন্তু গণিতে। এখানে ছক্কা মারলে বাজিমাত!
গণিতে নম্বর পাওয়া পানির মত সহজ। কারণ অংক পারলে পুরোটাই পাবেন। না পারলে ০ পাবেন।
বাংলার রচনার মত ২০ এ ১৫ দিতে পারবেন না পরীক্ষক। দিলে ২০ ই দিতে হবে।
প্রথমেই গণিতের সিলেবাসটা দেখে নিন।
বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি – গাণিতিক যুক্তি
বিসিএস গণিত লিখিত সিলেবাস
১)পাটিগণিত ও বীজগণিতীয় সরলীকরণ
২) ঐকিক নিয়ম, গড়, সরল ও যৌগিক মুনাফা, শতকরা, অনুপাত-সমানুপাত, লাভ-ক্ষতি, ল.সা.গু ও গ.সা.গু।
৩) বীজগণিতীয় সূত্রাবলি, বহুপদীর উৎপাদকে বিশ্লেষণ, একঘাত ও দ্বিঘাত সমীকরণ, একঘাত ও দ্বিঘাত অসমতা।
৪) দুই ও তিনচলক বিশিষ্ট রৈখিক সমীকরণ পদ্ধতি।
৫) সূচক ও লগারিদম।
৬) সমান্তর ও গুনোত্তর ধারা, অনুক্তম।
৭) রেখা, কোণ ও ত্রিভুজ সম্পর্কিত উপপাদ্য, পিথাগোরাসের উপপাদ্য, বৃত্ত সম্পর্কীয় উপপাদ্য ও অনুসিদ্ধান্ত।
৮) ক্ষেত্রফল সম্পর্কীত উপপাদ্য, পরিমিতি, সরলক্ষেত্র ও ঘনবস্তু।
৯) স্থানাঙ্ক জ্যামিতিঃ দূরত্ব ও সরলরেখার সমীকরণ।
১০) ত্রিকোণমিতিক অনুপাত, দূরত্ব ও উচ্চতাবিষয়ক সমস্যা।
১১) সেটের সূত্র ও ভেনচিত্র
১২) গণনার মূলনীতিঃ বিন্যাস, সমাবেশ ও সম্ভাব্যতা
টপিক থাকবে মোট ১২টি।
মোট নম্বরঃ ৫০।
এখন প্রস্তুতি কিভাবে নিবেন সেটা বলি।
৪৭ তম বিসএস পরীক্ষার পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিতে আমাদের এই প্রোগ্রামে এখনই এনরোল করুন।
বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি – গাণিতিক যুক্তি প্রস্তুতি কৌশল
খাতা কলমে করুনঃ গণিত করা যায় ২ ভাবে। চোখে চোখে কিংবা খাতায় কলমে। চোখে চোখে পড়লে হবে না। পরীক্ষার খাতায় অর্ধেক করে মনে আসবে না। তাই প্রচুর অনুশীলন করতে হবে। ২-৩টা নোটখাতা বানিয়ে নিবেন।
জ্যামিতি ভীতিঃ ৯০ ভাগ প্রার্থী জ্যামিতি পড়ে যান না। এই অংশে একটা কৌশল আছে। বিগত বছরের প্রশ্ন থেকে ১৫টি জ্যামিতি করবেন। এগুলো থেকেই কমন পাবার সম্ভাবনা অনেক।
গণিতে দুর্বলঃ গণিতে অনেকেই স্বাভাবিকভাবে দুর্বল থাকেন। মাথায় রাখবেন, বিসিএস এর গণিত আন্সার করতে আপনাকে বিশারদ হতে হবে না। এই গণিত একেবারেই বেসিক। ৯-১০, ১১-১২ এর বই থেকেই আসবে। তাই ভয় পাওয়ার দরকার নেই।
অনুশীলনঃ প্রতিদিন ২-৩ ঘন্টা অংক করবেন। এক সপ্তাহ পরপর রিভিশন দিবেন। রিভিশন দেয়াটা জরুরী। এক অংক ১ বার না করে ১০ বার করতে হবে। তাহলে আপনাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।
এখন কি কি বই পড়বেন সে বিষয়ে বলি।
বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি গাণিতিক যুক্তি বুকলিস্ট
বই কিনবেন একেবারেই কম।
১) নবম-দশম শ্রেণির গণিত বই।
২) ১১-১২শ শ্রেণির বই।
৩) প্রফেসরস গণিত লিখিত গাইড।
বোর্ড বই থেকে সিলেবাসের প্রতিটি টপিক ধরে ধরে অংক করবেন। আর একই অংকের অন্যান্য প্রশ্ন গাইড থেকে করবেন। তাহলে অনুশীলন হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ বিসিএস লিখিত সাধারণ বিজ্ঞান ও কম্পিউটার প্রস্তুতি
বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি (মানসিক দক্ষতা)
মানসিক দক্ষতায় সবাই এভারেজ একটা নম্বর পায়। প্রশ্ন সোজাই আসে।
বিচার-বুদ্ধি, কমন সেন্স কাজে লাগাতে হবে। কিছু প্রশ্ন আছে যেগুলোর নিয়ম জানতে হবে।
যেমনঃ ঘড়ির কাটার দিক নির্ণয়।
আবার কিছু প্রশ্নের জন্য কমন সেন্স লাগবে।
যেমনঃ দিক নির্ণয়ের প্রশ্ন।
সিলেবাসটা দেখে নিন।
বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি – মানসিক দক্ষতা সিলেবাস
Verbal Reasoning (ভাষাগত যৌক্তিক বিচার)
সঠিক শব্দচয়ন এক কথায় প্রকাশ সম্পর্কযুক্ত শব্দ বোধশক্তি অভীক্ষা অবস্থা, কারণ বিশ্লেষণ সম্পর্ক অনুধাবন অসম্ভাব্যতা জানা অজানা বিষয়সমূহ সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ।
Abstract Reasoning (বিমূর্ত যুক্তি)
চিত্রগত সাদৃশ্য, বৈসাদৃশ্য আয়নায় প্রতিফলন পানিতে প্রতিফলন চিত্র পূর্ণকরণ, বিন্যাস পূর্ণকরণ, সরল ও জটিল যান্ত্রিক প্রতিফলন।
Space Relations (স্থানাঙ্ক সম্পর্ক)
আকার, দিক নির্ধারণ, বর্ণানুক্রমিক ধারা, আকার গঠন বর্ণের মিলকরন।
Numerical Ability (সংখ্যাগত দক্ষতা)
যৌক্তিক সংখ্যা, সংখ্যাগত অভীক্ষা, ব্যতিক্রম সংখ্যা, সংখ্যাগত সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য, সংখ্যাগত পরম্পরা।
Spelling & Language (বানান ও ভাষা)
বর্ণ সাজানো, সমার্থক ও বিপরীতার্থক শব্দ, শুদ্ধ বানান, বিরামচিহ্নের ব্যবহার, ভুল শনাক্তকরণ।
Mechanical Reasoning (যান্ত্রিক দক্ষতা)
সরল ও জটিল যন্ত্রের ব্যবহার, কার্যক্রম ও প্রাথমিক জ্ঞান অন্যান্য যন্ত্র সংক্রান্ত সমস্যা যন্ত্র সংক্রান্ত সাদৃশ্য।
মোট ৬টা টপিক আছে।
নম্বর ৫০।
কিভাবে পড়বেন তার একটা গাইডলাইন দেখে নিন।
বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি (মানসিক দক্ষতা) প্রস্তুতি কৌশল
খুব বেশি চিন্তা না করাঃ প্রশ্নকে জটিল করে দেখবেন না। প্রশ্ন অধিকাংশ সোজাই আসে। বেশি ভাবতে গেলে সঠিক উত্তর বের করার পরেও ভূল দিবেন।
একটা প্রশ্নে বসে না থাকাঃ কোন প্রশ্ন পারছেন না। বেশি সময় এটা নিয়ে বসে থাকবেন না। ২-৩ বার ট্রাই করবেন। না পারলে অন্য প্রশ্ন আন্সার করবেন। পরীক্ষাটা মাথা ঠান্ডা রাখার খেলা। তাই সময়ের প্রতি যত্নবান হতে হবে।
প্রিলিতে যা এখানেও তাঃ প্রিলিতে যা পড়েছেন, এখানেও তাই। কোন এক্সট্রা কিছু নাই। তাই টেনশন করা লাগবে না। যা MCQ হিসেবে করেছিলেন, সেগুলো লিখতে হবে জাস্ট।
অনলাইনের হেল্পঃ অনলাইনে বেশ ভালো কয়েকটা সাইট পাবেন। এগুলোতে খুব ভাল প্রশ্ন আছে। এগুলো অনুশীলন করে নিতে পারেন। তাহলে লাভ হবে। সাইটগুলো নিচে বুকলিস্টের সাথে দিচ্ছি।
এখন বইয়ের তালিকা দেখে নিন।
বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি (মানসিক দক্ষতা) বুকলিস্ট
১) প্রথমেই বিগত বছরের প্রশ্নব্যাংক কিনবেন। প্রিলি, লিখিত উভয়ের জন্য। প্রফেসরস কিংবা জর্জ ভালো হবে।
২) খাইরুলস মেন্টাল এবিলিটি এই বইটা কিনে নিবেন।
৩) অনলাইন সাইট ভিজিট করবেন।
ভালো কিছু সাইট হলোঃ
একটি এপে এক্সাম দিতে পারেন। এপ পুরো ফ্রি। এপের নাম “Hello BCS”।
লিখিত পরীক্ষায় গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতায় নম্বর তোলা একেবারেই সহজ। তাই কৌশল করে পড়ুন। শুধু শুধু ভয় পাবেন না। মনে রাখবেন অন্যরা যেটা পারেনা আপনাকে সেটা পারতে হবে। বিসিএস ক্যাডার তো সবাই হয়না।
লিখিত পরীক্ষা ক্যাডার নির্ধারণের পরীক্ষা। ভালো নম্বর পেলে ভালো ক্যাডার পাবেন। পররাষ্ট্র, এডমিন এগুলো পাবেন। আর কম নম্বর পেলে নিচের দিকের ক্যাডার বা নন-ক্যাডার পাবেন।
তাই অংকে মার্ক তুলে নিন। যত বেশি তুলবেন, অন্যরা আপনার থেকে তত পিছিয়ে যাবে।
আজ বিসিএস লিখিত প্রস্তুতি (গাণিতিক যুক্তি ও মানসিক দক্ষতা) নিয়ে এটুকুই।