এমন অনেক মানুষ আছেন, যারা বিসিএস পাশ করেও ক্যাডার হতে পারেননি। কি, অবাক লাগছে? অবাক লাগার কিছু নেই। সিভিল সার্ভিস বাংলাদেশের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ চাকরি। এই চাকরিতে আসার আগে, প্রার্থী এই চাকরির যোগ্য কি না সেটা খুব ভালোভাবেই বিবেচনা করা হয়। তবে যোগ্যতার মানদন্ডে আহামরি কোন শর্ত নেই।
যাদের চোখে সমস্যা তাদের একটা ভয় কাজ করে বিসিএস নিয়ে। আমার তো চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, আমি কি বিসিএস দিতে পারব?

যাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষায় ভালো সিজিপিএ নেই তারা হতাশাগ্রস্ত। এই কম সিজি নিয়ে কি ক্যাডার হতে পারব?
এরকম অসংখ্য দুশ্চিন্তা, ভয় থাকে আমাদের। আমরা নেগেটিভ বিষয় নিয়ে ভাবতে ভালোবাসি। কোন একটা জিনিস না থাকলে আমার কি হবে, সেটা নিয়েই আমাদের যত মাথাব্যাথা।
আজকের আর্টিকেলে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা সম্পর্কে জানবো।
বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা কি কি?
আদতে বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা অনেকটা শিথীল। যে কেউই আবেদন করতে পারবেন যদিনা খুব বড় ধরনের কোন সমস্যা থাকে।
মূলত ৪ ধরনের বিসিএস ক্যাডার হওয়ার যোগ্যতা বিবেচনা করা হয় প্রার্থীদের জন্য।
২। বয়সসীমা
৩। নাগরিকত্ব
আরও পড়ুনঃ ৪৩ তম বিসিএস লিখিত ফলাফল ২০২৩
বিসিএস এর নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ
বিসিএস পরীক্ষায় আবেদন করতে চাইলে এসএসসি থেকে স্নাতক পর্যন্ত পাশ করতে হবে। স্নাতক বলতে ৪ বছর মেয়াদী কোর্স বুঝায়। এসএসসি থেকে স্নাতক পর্যন্ত সবগুলো পরীক্ষার যেকোন দুটিতে দ্বিতীয় শ্রেণী বা সমমান এবং ১টি তৃতীয় শ্রেণী বা সমমান এর নিচে পেলে সেই প্রার্থী বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারবেন না।
যদি কোন প্রার্থী এইচএসসি পরীক্ষা শেষে ডিগ্রী বা ৩ বছর মেয়াদী সমমান কোর্সে পড়াশুনা করেন, তাহলে ডিগ্রী পাসের পরে স্নাতকোত্তর বা মাস্টার্স পাশ করতে হবে। তারপরে তিনি বিসিএস এ আবেদন করতে পারবেন।
বর্তমানে জিপিএ সিস্টেম থাকায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণী নির্ধারণ করতে সমস্যায় ভোগেন প্রার্থীরা। ফলে অনেকে কনফিউজ হয়ে থাকেন বিসিএস পরীক্ষা দিতে কত পয়েন্ট লাগে এই নিয়ে। সহজ একটা হিসাব দিয়ে দিচ্ছি ফলে শিক্ষার ক্ষেত্রে বিসিএস এর নূন্যতম যোগ্যতা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
জিপিএ থেকে শ্রেণী বের করার পদ্ধতিঃ
SSC এবং HSC এর ক্ষেত্রেঃ
৩ বা তদুর্ধ্ব = প্রথম শ্রেণী
২ থেকে ৩ এর কম= দ্বিতীয় শ্রেণী
১ থেকে ২ এর কম= তৃতীয় শ্রেণী
অনার্সের ক্ষেত্রেঃ
৩ বা তদুর্ধ্ব = প্রথম শ্রেণী
২.২৫ থেকে ৩ এর কম= দ্বিতীয় শ্রেণী
১.৬৫ থেকে ২.২৫ এর কম= তৃতীয় শেণী
বয়সসীমাঃ
পিএসসি যে মাসে বিসিএস এর বিজ্ঞাপন জারি করবে সে মাসের ১ম তারিখে যদি কোন প্রার্থীর বয়স –
- ২১ বছরের কম হয় অথবা ৩০ বছরের বেশি হয় তাহলে ওই প্রার্থী বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।
তবে কিছু ক্ষেত্রে বয়স সীমা শিথিল যোগ্য।
- মুক্তিযোদ্ধার পুত্র বা কন্যা, প্রতিবন্ধী, স্বাস্থ্য ক্যাডারের প্রার্থীদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ বছর।
- বিসিএস সাধারণ শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা, স্বাস্থ্য ক্যাডারে উপজাতীদের জন্য সর্বোচ্চ ৩২ বছর।
নাগরিকত্বঃ
বাংলাদেশের নাগরিক নয় এমন কোন ব্যক্তি বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। সরকারের অনুমতি ব্যতিরেকে কোন বিদেশী নাগরিককে বিয়ে করলে বা বিয়ে করার প্রতিজ্ঞা করলে তিনি বিসিএস পরীক্ষা দিতে পারবেন না।
শারীরিক যোগ্যতাঃ
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মেডিকেল টেস্ট করানো হয়। মেডিকেল টেস্টে পাশ না করলে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া যায়না।
মেডিকেল টেস্টে সাধারণতঃ
- উচ্চতা, ওজন ও বক্ষ পরিমাপ করা হয়।
- দৃষ্টিশক্তি যাচাই করা হয়।
- মূত্র পরীক্ষা করা হয়।
আরও পড়ুনঃ ৩৫ তম – ৪৫ তম বিসিএস প্রিলিমিনারি প্রশ্ন সমাধান (35 – 45 BCS Question Bank PDF)
উচ্চতা, ওজন ও বক্ষ পরিমাপঃ
পুরুষ প্রার্থীর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন উচ্চতা ৫ ফুট হতে হবে। সর্বনিম্ন ওজন ৪৯.৯৯ কেজি। তবে পুলিশ ও আনসার ক্যাডার এর জন্য সর্বনিম্ন উচ্চতা ও ওজন যথাক্রমে ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি ও ৫৪.৫৪ কেজি হতে হবে।
মহিলা প্রার্থীর জন্য সর্বনিম্ন উচ্চতা ৪ ফুট ১০ ইঞ্চি। মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন ওজন ৪৩.৫৪ কেজি। তবে পুলিশ ও আনসার ক্যাডার এর জন্য মহিলা প্রার্থীর সর্বনিম্ন উচ্চতা ৫ ফুট হতে হবে। সর্বনিম্ন ওজন ৪৫.৪৫ কেজি হতে হবে।
উল্লেখ্য যে, ওজন কম হলেও বাড়ানোর সুযোগ দেয়া হয়।
দৃষ্টিশক্তিঃ দৃষ্টিশক্তির জন্য নিম্নলিখিত মানদন্ড অনুযায়ী বিবেচনা করা হয়।

সহজ কথায় চোখে সমস্যা থাকলে ও চশমা ব্যবহার করার পরে যদি কোন সমস্যা না থাকে তাহলে ক্যাডার হতে কোন সমস্যা নেই। কেউ যদি রঙ ধরতে না পারেন তাহলে ও তিনি বিসিএস এ যোগ্য হবেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে এই তথ্য উনার রিপোর্টে লিখা থাকতে হবে।
বক্ষ পরিমাপঃ উচ্চতার সাথে বক্ষ পরিমাপে নিম্নোক্ত চার্ট অনুসরণ করা হয়।

মূত্র পরীক্ষাঃ মূত্র পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে যাবতীয় রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য মেডিকেল টিম গঠন করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালক। স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কোন প্রার্থী অযোগ্য বিবেচিত হলে তা প্রার্থীকে এবং বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন কে জানানো হয়।
একজন প্রার্থীকে বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পূর্বে এই যোগ্যতাগুলো ও বিসিএস পরীক্ষার পদ্ধতির সকল তথ্যাবলী ভালোভাবে জানা উচিৎ। তাই বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা ভালোভাবে দেখে বিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে হয়।
বিসিএস পরীক্ষা কতবার দেওয়া যায়?
৪ বছরের স্নাতক ফাইনাল পরীক্ষা শেষ করে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত বিসিএস পরীক্ষা দেয়া যায়। ফলে এক একজন বিসিএস প্রার্থী অনেক গুলো বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন। তবে সম্প্রতি ২ বারের বেশি বিসিএস পরীক্ষা অংশের সুযোগ বন্ধের চিন্তাভাবনা করছে সরকার। বিষয়টি এখনো প্রাথমিক আলোচায় সীমাবদ্ধ রয়েছে।
বিসিএস নিয়ে আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে আমাদের সাথে ফেসবুক পেজ Hello BCS এ যোগাযোগ করতে পারবেন। তাছাড়া আপনি Hello BCS অ্যাপ বাবহার করে বিসিএস ও অন্যান্য চাকরির সকল প্রস্তুতি নিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
পিডিএফ ফরম্যাটে এই আর্টিকেল পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।
বিসিএস পরীক্ষার যোগ্যতা কি তা নিয়ে আলোচনা আজ এই পর্যন্তই। ধন্যবাদ।

ভালো লাগলো
good post
Amar kub ISSA BCS EXAM DEWAR…BUT PARBO KINA JANI NA…TOBE SESTA KORTESI
Thanks
Wonderful describe
আমি এখন ও এস এস সি পরিক্ষা দেইনি। আমি এসএসসি পরীক্ষার্থী। তবে আমার স্বপ্ন যে আমি বিসিএস পরীক্ষা দেওয়ার।