যেকোনো পরীক্ষায় ভালো ফলাফলের জন্য প্রয়োজন পরিপূর্ণ প্রস্তুতি। একটি বিষয় যখন আপনি পড়ার জন্য সিলেক্ট করবেন আপনার উচিত সেই বিষয় সম্পর্কে যাবতীয় খুঁটিনাটি পড়ে ফেলা। যাতে কিছু বাকি না থাকে। এবং আপনি একশতে একশ পারসেন্ট প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন।প্রাইমারি,বিসিএস, ব্যাংকসহ সব ধরনের চাকরি পরীক্ষায় বাংলার ব্যাকরণ অংশ হতে প্রশ্ন এসে থাকে। আজকের আর্টিকেলে বাংলা ব্যাকরণের কিছু অংশ আলোচনা করবো।
বিসিএস বাংলা ব্যাকরণ প্রস্তুতিঃ
ধ্বনিঃ
ভাষার শব্দ গঠিত হয় ধ্বনির সমন্বয়ে অর্থাৎ ভাষার ক্ষুদ্রতম একক ধ্বনি। ধ্বনি ও বর্ণের মধ্যে পার্থক্য হলো- একটি মৌখিক ও অন্যটি লৌখিক রূপ।
⇒ভাষার মূল উপাদান/ ক্ষুদধতম একক— ধ্বনি। ভাষার স্বর বলা হয়— ধ্বনিকে। ভাষার শব্দ গঠিত হয়— ধ্বনির সমন্বয়ে।
স্বরধ্বনি :
যে ধ্বনি বা ধ্বনিসমূহ অন্য কোনো ধ্বনির সংমিশ্রণ বা সহায়তা ছাড়া স্পষ্টভাবে উচ্চারিত হয় সেগুলোকে স্বরধ্বনি বলে।
- স্বরধ্বনি— (১১টি)।
- হ্রস্ব স্বর— মোট চার (৪) টি। যথা- অ, ই, উ এবং ঋ।
- দীর্ঘ স্বর— মোট সাত (৭) টি। যথা- আ, ঈ, ঊ, এ, ঐ, ও এবং ঔ।
- মৌলিক স্বরধ্বনি— মোট সাত (৭)টি। যথা- অ, ই, উ, এ, ও, আ এবং এয়্যা।
- যৌগিক স্বরবর্ণ— মোট দুই (২) টি। যথা- ঐ এবং ঔ।
- যৌগিক স্বরধ্বনি— ২৫টি।
- ঐ, ঔ— এ দুটি দ্বিস্বর বা যুগ্ম ̄স্বরধ্বনির প্রতীক। যেমন :অ + ই = অই; অ + উ = অউ বা, ও + উ = ওউ
- মূল স্বরধ্বনি নয়— ঐ এবং ঔ।
- উচ্চারণের সময় মুখবিবর উন্মুক্ত থাকে বলে ‘আ’ কে বলা হয়- বিবৃত স্বরধ্বনি।
ব্যাঞ্জন ধ্বনি :
যে সব ধ্বনি অন্তত একটি স্বরধ্বনির সংমিশ্রণ বা সহায়তা ছাড়া উচ্চারিত হতে পারে না, সেগুলোই ব্যাঞ্জন ধ্বনি।
স্পর্শ ধ্বনি: কণ্ঠ, তালু, মূর্ধা, দত্ত, ওষ্ঠ্য স্পর্শ করে উচ্চারিত হয় । ক থেকে ম পর্যন্ত পঁচিশটি স্পর্শ ধ্বনি। উচ্চারণ অনুযায়ী স্পর্শ ধ্বনি ৫ ভাগে বিভক্ত।
- অল্পপ্রাণ ধ্বনি: কোনো কোনো ধ্বনি উচ্চারণের সময় নিঃশ্বাস জোরে সংযোজিত হয় না। যেমন: ক, গ ইত্যাদি।
- মহাপ্রাণ ধ্বনি: কোনো কোনো ধ্বনি উচ্চারণের সময় নিঃশ্বাস জোরে সংযোজিত হয়। যেমন: খ, ঘ ইত্যাদি I
- অঘোষ ধ্বনি: কোনো কোনো ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয় না। তখন ধ্বনিটির উচ্চারণ গাম্ভীর্যহীন মৃদু হয়। যেমন: ক, খ ইত্যাদি।
- ঘোষ ধ্বনি: ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বরতন্ত্রী অনুরণিত হয়। যেমন: গ, ঘ ইত্যাদি।
- নাসিক্য ধ্বনি: উচ্চারণকালে নাক দিয়ে ফুসফুস তাড়িত বাতাস বের হয় এবং উচ্চারণের সময় নাসিকার আংশিক সাহায্য পায় । নাসিক্য ধ্বনি ৫ টি। যেমন: ঙ, ঞ, ণ, ন, ম।
অন্ত:স্থ ধ্বনি: স্পর্শ বা উষ্ম ধ্বনির অন্তরে অর্থাৎ মাঝে আছে বলে এগুলোকে অন্তঃস্থ ধ্বনি বলা হয়। যেমন: য, র, ল, ব।
উষ্ম ধ্বনি: যে ব্যঞ্জনের উচ্চারণে বাতাস মুখবিহ্বরের কোথাও বাধা না পেয়ে কেবল ঘর্ষণপ্রাপ্ত হয় এবং শিশ ধ্বনির সৃষ্টি করে, সেটি উষ্ম বা শিশ ধ্বনি। যেমন: শ, ষ, স, হ-এ ৪ টি উষ্মবর্ণ। শ, ষ, স- এ তিনটি বর্ণে দ্যোতিত ধ্বনি অঘোষ অল্পপ্রাণ এবং ‘ হ’ ঘোষ মহাপ্রাণ ধ্বনি।
অযোগবাহ ধ্বনি:অন্য বর্ণের সঙ্গে যোগ রেখে যে ধ্বনিগুলোর প্রয়োগ হয় তাদের অযোগবাহ ধ্বনি বলে। যেমন: ং এবং ঃ। বিসর্গ (ঃ) এর উচ্চারণ হ এর মতো।
ব্যঞ্জনধ্বনির অন্যান্য শ্রেণিবিভাগ:
- র-কে কম্পনজাত ধ্বনি বলে।
- ং এবং ঃ কে পরাশ্রয়ী ধ্বনি বলে।
- ল ধ্বনি হচ্ছে পার্শ্বিক ধ্বনি।
- ড় ও ঢ় ধ্বনি হচ্ছে তাড়নজাত ধ্বনি।
- চন্দ্ৰবিন্দুকে (*) আনুনাসিক ধ্বনি বলে।
ধ্বনির পরিবর্তনঃ
বিভিন্ন কারণে মূল ধ্বনি উচ্চারণ না করে, ধ্বনি যখন বিকৃততভাবে উচ্চারণ করা হয়, তখন ধ্বনির পরিবর্তন হয়। যেমন- ফাল্গুন -> ফাগুন (একটি ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেয়েছে)।
ধ্বনি পরিবর্তন ২ প্রকার। যথাঃ স্বরধ্বনির পরিবর্তন ও ব্যঞ্জনধ্বনির পরিবর্তন।
ব্যঞ্জনধ্বনির পরিবর্তন
- ব্যঞ্জন শব্দটি থাকলে ব্যঞ্জন ধ্বনির পরিবর্তন। যেমন : দ্বিত্ব ব্যঞ্জন , ব্যঞ্জন বিকৃতি, ব্যঞ্জনচ্যুতি ইত্যাদি।
- শব্দের প্রথম বর্ণ ব্যঞ্জন বর্ণ হলে সেটি হবে ব্যঞ্জন ধ্বনি পরিবর্তন। যেমন : ধ্বনি বিপর্যয়, সমীভবন, বিষমীভবন, র-কার লোপ, হ-কার লোপ ইত্যাদি।
বিভিন্ন ধরনের ব্যঞ্জনধ্বনির পরিবর্তন
- বিষমীভবন: বিষমীভবনের ক্ষেত্রে দুটো সমবর্ণের একটির পরিবর্তন ঘটে। যেমন: লাল> নাল, শরীর> শরীল, তরোয়ার> তলোয়ার, লাঙ্গল> নাঙ্গল, জরুরি> জরুলি।
- . ধ্বনি বিপর্যয়: শব্দের মধ্যে দুটি ব্যঞ্জনের পরস্পর স্থান পরিবর্তনকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে। যেমনঃ পিশাচ> পিচাশ, লাফ> ফাল, (ইংরেজি) বাক্স> (বাংলা) বাস্ক, (জাপানি) রিক্সা>(বাংলা) রিস্কা, পাগলা> পালগা, টোপলা> টোলপা ইত্যাদি।
- ব্যঞ্জন বিকৃতি: শব্দের মধ্যে কোনো কোনো ব্যঞ্জন পরিবর্তন হয়ে নতুন ব্যঞ্জনধ্বনি ব্যবহৃত হলে তাকে ব্যঞ্জন বিকৃতি বলা হয়। যেমন: ধাইমা> দাইমা, কবাট> কপাট, ধোবা> ধোপা।
- সমীভবনঃ সমীভবনে দুটো ধ্বনি একে অপরের প্রভাবে সমতা লাভ করে। যেমন: জন্ম> জন্ম, পদ্ম> পদ্দ, তৎ + হিত> তদ্ধিত, কাঁদনা> কান্না
- প্রগত (Progressive): সমীভবন পূর্ব ধ্বনির প্রভাবে পরবর্তী ধ্বনির পরিবর্তন ঘটে। যেমন- চক্র>চকক, পদ্মা> পদ্দ, লগ্ন> লগগ ইত্যাদি।
- পরাগত (Regressive): সমীভবন পরবর্তী ধ্বনির প্রভাবে পূর্ববর্তী ধ্বনির পরিবর্তন হয়, একে বলে পরাগত সমীভবন। যেমন- তৎ + জন্য> তজ্জন্য, তৎ + হিত> তদ্ধিত, উৎ + মুখ> উন্মুখ ইত্যাদি।
- অন্যোন্য (Mutual) সমীভবন: যখন পরস্পরের প্রভাবে দুটো ধ্বনিই পরিবর্তিত হয় তখন তাকে বলে অন্যোন্য সমীভবন। যেমন- সংস্কৃত: সত্য> প্রাকৃত সচ্চ। সংস্কৃত: বিদ্যা> প্রাকৃত বিজ্জা ইত্যাদি।
- অন্তর্হতি: পদের মধ্যে কোন ব্যঞ্জন লোপ হলে অন্তহর্তি হয়। যেমন: ফলাহার> ফলার, ফাল্গুন> ফাগুন, আলাহিদা> আলাদা।
- হ-কার লোপ : পদের মধ্য থেকে শুধু ‘হ’-কার হারিয়ে গেলে তাকে ‘হ’-কার লোপ বলে। যেমন : ড় গাহিল ˃ গাইল (‘হ’ ব্যঞ্জনধ্বনি হারিয়ে গেল)
- ব্যঞ্জনদ্বিত্বা : শব্দকে জোর দিয়ে উচ্চারণ করার জন্য বর্ণযুক্ত বা দ্বিত্ব হলে, তাকে ব্যঞ্জনদ্বিত্বা বলে। যেমন : ড় পাকা ˃ পাক্কা (জোর দিয়ে উচ্চারণের জন্য ‘ক’ ব্যঞ্জনটির দ্বিত্ব হয়েছে), ড় সকাল ˃ সক্কাল জোর দিয়ে উচ্চারণের জন্য ‘ক’ ব্যঞ্জনটির দ্বিত্ব হয়েছে)
- ‘র’-কার লোপ : ‘র’-কার লোপ পেয়ে পরবর্তী ব্যঞ্জন দ্বিত্ব হয়। যেমন : ড় তর্ক ˃ তক্ক , করতে ˃ কত্তে, মারল ˃ মাল্ল (‘র’-কার লোপ পেল এবং পরবর্তী ব্যঞ্জন দ্বিত্ব হলো)
আরও পড়ুনঃ বিসিএস প্রস্তুতিঃ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ ও মধ্যযুগ (Bangla literature bcs preparation)
স্বরধ্বনির পরিবর্তন
- স্বরশব্দটি থাকলে স্বরধ্বনি পরিবর্তন। যেমন : আদি স্বরাগম, মধ্য স্বরাগম, অন্ত স্বরাগম, স্বরলোপ ইত্যাদি।
- শব্দের প্রথম বর্ণ স্বরবর্ণ হলে স্বধ্বনির পরিবর্তন। যেমন : অপিনিহিতি, অসমীকরণ,ইত্যাদি।
বিভিন্ন ধরনের স্বরধ্বনির পরিবর্তন
- আদি স্বরাগম: উচ্চারণের সুবিধার জন্য বা অন্য কোনো কারণে শব্দের প্রথম সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনিকে না ভেঙ্গে এর আগে কোন স্বরধ্বনির আগমন করলে তাকে আদি স্বরাগম বলে। যেমন: স্কুল> ইস্কুল, স্টেশন> ইস্টিশন, স্ত্রী> ইস্ত্রী।
- মধ্য স্বরাগম: মধ্য স্বরাগমে সাধারণত সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির মাঝখানে স্বরধ্বনি আসে। যেমন: শ্লোক> শোলক; স্বপ্ন> স্বপন। মধ্যস্বরাগমকে বিপ্রকর্ষ বা স্বরভক্তিও বলা হয়।
- অন্ত্যস্বরাগম: কখনো কখনো উচ্চারণের সময় শব্দের শেষে অতিরিক্ত স্বরধ্বনি আসে, এরূপ স্বরাগমকে অন্ত্যস্বরাগম বলে। যেমন: বেঞ্চ> বেঞ্চি, দিশ> দিশা, সত্য> সত্যি।
- অপিনিহিতি: অপিনিহিতির ক্ষেত্রে পরের ই-কার বা উ-কার আগে চলে আসে। যেমন: আজি>আইজ, চারি> চাইর, সাধু> সাউধ। আবার য ফলার অন্তর্নিহিত ই ধ্বনিরও অপিনিহিতি ঘটে। যেমন: সত্য> সইত্য, কন্যা> কইন্যা।
- অসমীকরণ: একই স্বরের পুনরাবৃত্তি দূর করার জন্য মাঝখানে কোনো স্বরধ্বনি যুক্ত হলে তাকে অসমীকরণ বলে। যেমন: টপ + টপ> টপাটপ, ধপ + ধপ> ধপাধপ।
- সম্প্রকর্ষ: উচ্চারণের দ্রুততার জন্য শব্দের আদি, অন্ত্য বা মধ্যবর্তী কোনো স্বরধ্বনির লোপকে সম্প্রকর্ষ বলা হয়। যেমন: জানালা> জানলা, সুবর্ণ> স্বর্ণ, আশা> আশ। সম্প্রকর্ষকে স্বরলোপও বলা হয়।
- স্বরসঙ্গতিঃএকটি স্বরধ্বনির প্রভাবে অপর স্বরের পরিবর্তন ঘটলে তাকে স্বরসঙ্গতি বলা হয়। যেমন: মুলা> মুলো, বিলাতি> বিলিতি, দেশি> দিশি।
- প্রগত (Progressive): আদিস্বর অনুযায়ী অন্ত্যস্বর পরিবর্তিত হলে প্রগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন- মুলা> মুলো, শিকা> শিকে,, তুলা> তুলো।
- পরাগত (Regressive): অন্ত্যস্বরের কারণে আদ্যস্বর পরিবর্তিত হলে পরাগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন- আখো> আখুয়া এখো, দেশি> দিশি।
- মধ্যগত (Mutual): আদ্যস্বর ও অন্ত্যস্বর কিংবা অন্ত্যস্বর অনুযায়ী মধ্যস্বর পরিবর্তিত হলে মধ্যগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন- বিলাতি> বিলিতি
- অন্যোন্য (Reciprocal) আদ্য ও অন্ত্য দু স্বরই পরস্পর প্রভাবিত হলে অন্যোন্য স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন- মোজা> মুজো।
- অভিশ্রুতি: বিপর্যস্ত স্বরধ্বনি পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির সাথে মিলে গেলে এবং তদানুসারে পরবর্তী স্বরধ্বনির পরিবর্তন ঘটলে তাকে অভিশ্রুতি বলে। যেমন: শুনিয়া> শুনে, চলিয়া> চলে, হাটুয়া> হাউটা> হেটো।
বর্ণ
যে কোন ভাষায় ব্যবহৃত লিখিত বর্ণসমষ্টিকে সেই ভাষার বর্ণমালা বলা হয়। যেসব বর্ণমালায় বাংলা ভাষা লিখিত হয়, তাকে বলা হয় বঙ্গলিপি।
- ধ্বনি নির্দেশক চিহ্ন বর্ণ
- ভাষার ইট বলা হয় বর্ণ
- এক প্রয়াসে উচ্চারিত ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টিকে বলা হয় অক্ষর।
- অক্ষর উচ্চারণের কাল পরিমাণকে বলা হয় মাত্রা।
বাংলা বর্ণও দুই প্রকার। যথা :স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ
স্বরবর্ণ :
স্বরধ্বনির লিখিত চিহ্ন বা সংকেতকে বলা হয় স্বরধ্বনি।
- বাংলা ভাষায় মৌলিক স্বরধ্বনি ৭টি। কিন্তু স্বরবর্ণ ১১টি। যথা : অ, আ, ই, ঈ, উ, ঊ, ঋ, এ, ঐ, ও, ঔ।
- হ্রস্ব স্বর : হ্রস্ব স্বর মোট চার (৪) টি। অ, ই, উ এবং ঋ
- দীর্ঘ স্বর : দীর্ঘ স্বর মোট সাত (৭) টি। আ, ঈ, ঊ, এ, ঐ, ও এবং ঔ।
ব্যঞ্জনবর্ণ :
ব্যঞ্জনধ্বনির লিখিত চিহ্ন বা সংকেতকে ব্যঞ্জনবর্ণ বলা হয়। বাংলা ভাষায় ব্যঞ্জনবর্ণ ৩৯টি। যথা : ক খ গ ঘ ঙ চ ছ জ ঝ ঞ ট ঠ ড ঢ ণ ত থ দ ধ ন প ফ ব ভ ম য র ল শ ষ স হ ড় ঢ় য় ৎ ং ঃ ঁ
- উচ্চারণস্থান অনুসারে স্বর ও ব্যঞ্জনবর্ণগুলোর বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়।
- কণ্ঠ্য বা জিহ্বামূলীয় বর্ণ : অ, আ, ক, খ, গ, ঘ ঙ, হ
- তালব্য বর্ণ: ই, ঈ, চ, ছ, জ, ঝ, ঞ, য, য়, শ
- ওষ্ঠ্য বর্ণ: উ, ঊ, প, ফ, ব, ভ, ম
- মূর্ধন্য বর্ণ: ঋ, ট, ঠ, ড, ঢ, ণ, র, ড়, ঢ়, ষ
- কণ্ঠতালব্য বর্ণ: এ, ঐ
- কণ্ঠোষ্ঠ্য বর্ণ: ও, ঔ
- দন্ত্য বর্ণ: ত, থ, দ, ধ, ন, ল, স
- নাসিক্য বর্ণ: ং ঁ ঙ ঞ ণ ন ম
- উষ্ম বর্ণ: শ ষ স হ
- অন্ত:স্থ বর্ণ: য ব র ল
- তাড়নজাত বর্ণ: ড় ঢ়
- কম্পনজাত বর্ণ: র
- পরাশ্রয়ী বর্ণ: ঝ ঃ ঁ
মাত্রার উপর ভিত্তি করে বর্ণকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায়।
পূর্ণমাত্রা (৩২ টি):
স্বরবর্ণ– অ আ ই ঈ উ ঊ (৬ টি)
ব্যঞ্জনবর্ণ – ক ঘ চ ছ জ ঝ ট ঠ ড ঢ ত দ ন ফ ব ভ ম য র ল ষ স হ ড় ঢ় য় (২৬ টি)
অর্ধমাত্রা (৮ টি)
স্বরবর্ণ – ঋ (১ টি)
ব্যঞ্জনবর্ণ – খ গ ণ থ ধ প শ (৭ টি)
মাত্রাহীন (১০ টি)

স্বরবর্ণ – এ ঐ ও ঔ (৪ টি)
ব্যঞ্জনবর্ণ – ঙ ঞ ৎ ঝ ঃ ঁ (৬ টি)
মাত্রা | স্বরবর্ণ | ব্যঞ্জনবর্ণ |
পূর্ণমাত্রা (৩২ টি) | অ আ ই ঈ উ ঊ (৬ টি) | ক ঘ চ ছ জ ঝ ট ঠ ড ঢ ত দ ন ফ ব ভ ম য র ল ষ স হ ড় ঢ় য় (২৬ টি) |
অর্ধমাত্রা (৮ টি) | ঋ (১ টি) | খ গ ণ থ ধ প শ (৭ টি) |
মাত্রাহীন (১০ টি) | এ ঐ ও ঔ (৪ টি) | ঙ ঞ ৎ ঝ ঃ ঁ (৬ টি) |
- ঘোষ, অঘোষ, অল্পপ্রাণ, মহাপ্রাণ ধ্বনি
মহাপ্রাণ ধ্বনি(২য় ও ৪র্থ কলাম) | অঘোষ ধ্বনি(১ম ও ২য় কলাম) | ঘোষ ধ্বনি(৩য়, ৪র্থ,৫ম কলাম) | |||
̄বর্গ | ১ম | ২য় | ৩য় | ৪র্থ | ৫ম |
‘ক’-বর্গীয় | ক | খ | গ | ঘ | ঙ |
‘চ’-বর্গীয় | চ | ছ | জ | ঝ | ঞ |
ট’-বর্গীয় | ট | ঠ | ড | ঢ | ণ |
‘ত’-বর্গীয় | ত | থ | দ | ধ | ন |
প’-বর্গীয় | প | ফ | ব | ভ | ম |
̄স্পর্শ ব্যঞ্জন (১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ, ৫ম বর্গ) = ২৫টি (ক-ম পর্যন্ত) |
যুক্ত বর্ণঃ কিছু গুরুত্বপূর্ণ যুক্ত বর্ণ নিচে দেয়া হল—
ক্ + ষ = ক্ষ (কক্ষপথ)
হ্ + ম = হ্ম (ব্রহ্মপুত্র)
ক্ + ষ্ + ন = ক্ষ্ণ (তীক্ষ্ণ )
ক + ষ + ম = ক্ষ্ম (সূক্ষ্ম)
ক্ + স = ক্স (বাক্স)
ঙ + ক = ঙ্ক (অঙ্ক)
জ্ + ঝ = জ্ঝ (কুজ্ঝটিকা)
জ্ + ঞ = জ্ঞ (বিজ্ঞান)
ঞ্ + ঝ = ঞ্ঝ (ঝাঞ্ঝা)
ষ + ণ = ষ্ণ (তৃষ্ণা)
ঞ্ + চ = ঞ্চ (অঞ্চল)
হ্ + ন = হ্ন (মধ্যাহ্ন, বহ্নি)
হ্ + ণ = হ্ণ (অপরাহ্ণ)
ঞ + ছ = ঞ্ছ (বাঞ্ছনীয়)
ন্ + ধ = ন্ধ (অন্ধ)
বচন
বচন একটি পারিভাষিক শব্দ যার অর্থ সংখ্যার ধারণা। বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের সংখ্যাত্মক বা সংখ্যার ধারণা প্রকাশের উপায়কে বচন বলে।
বাংলা ব্যাকরণে বচন ২ প্রকার। যথাঃ-
- একবচন
- বহুবচন
এক বচনঃ
যেসব শব্দ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তু বা প্রাণীর একটিমাত্র সংখ্যার ধারণা বোঝায়, তাকে একবচন বলে।
যেমন-
- গামছাখানা কোথায় রাখলে?
- কাজল কি বাড়ি ফিরেছে?
একবচন চেনার উপায়/ এক বচনের নিয়ম
১. শব্দের মূল রূপ এক বচন হিসাবে ব্যবহৃত হয়। যেমনঃ
আজ স্কুলে যাব না।
রীতা গান শিখতে গেছে।

বাস ঢাকা ছেড়েছে।
২. শব্দের শেষে টি, টা, খান, খানা, খানি, গাছ, গাছা, গাছি ইত্যাদি যোগ করে। যেমনঃ
মেয়েটি খুব চালাক। তোমার কলমটা দাও তো। বইখানা আমি পড়েছি।
দাদুর হাতে লাঠিগাছা বেশ মানিয়েছে।
৩. শব্দের আগে এক, একটা, একটি, একখানা, একজন ইত্যাদি সংখ্যাবাচক শব্দ বসিয়ে এক বচন করা হয়। যেমনঃ
তোমার সাথে একটা কথা ছিল। একখানা ইংরেজি খবরের কাগজ এনো তো।
একজন ছাত্র এসেছিল তোমার কাছে।
বহুবচনঃ
যেসব শব্দ দিয়ে একাধিক সংখ্যক ব্যক্তি, বস্তু বা প্রাণীর ধারণা পাওয়া যায়, তাকে বহুবচন বলে। যেমনঃ
আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। ছেলেরা মাঠে খেলছে। শিশুগণ দেয় মন নিজ নিজ পাঠে।
রাখাল গরুরপাল লয়ে যায় মাঠে
বহুবচন চেনার উপায়/ বহুবচনের নিয়ম
১. শব্দের শেষে রা, এরা, দের, গুলো, গুলি বিভক্তি যোগ করে।যেমনঃ
শ্রমিকেরা ধর্মঘট ডেকেছে। আমগুলো রাজশাহী থেকে এসেছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের আমরা শ্রদ্ধা করি।
২. শব্দের শেষে গণ, বৃন্দ, বর্গ, কুল, মণ্ডলী, মালা, গুচ্ছ, পাল, দল, দাম, ঝাঁক, আবলি, সব, সমূহ, রাজি, রাশি, পুঞ্জ, শ্রেণি ইত্যাদি সমষ্টিবাচক শব্দ যোগ করে।যেমনঃ
ভক্তবৃন্দ কবিকে শুভেচ্ছা জানালেন।
সন্ধ্যায় পক্ষিকূল কুপায় ফিরে এসেছে।
৩. শব্দের আগে অনেক, অজস্র, অসংখ্য প্রচুর, বহু, বিস্তর, নানা, ঢের, সব, সকল, সমস্ত, হরেক ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করে। যেমনঃ
এবার পরীক্ষায় অনেক ছাত্র ফেল করেছে।
তার অজস্র টাকা-পয়সা হয়েছে।
৪. একই শব্দ পর পর দুবার বসিয়ে বহুবচন করা হয়। যেমনঃ
বাগানটা ফুলে ফুলে ভরে গেছে।
বরযাত্রীরা হাঁড়ি হাঁড়ি সন্দেশ নিয়ে এসেছে।
৫. আগে সংখ্যাবাচক শব্দ বসিয়ে বহুবচন করা হয়। যেমনঃ
শিয়াল তার সাত ছেলেকে কুমিরের কাছে পড়তে দিল।
দশ কেজি রসগোল্লা দিন তো।
৬. কখনো কখনো একবচনের রূপ দিয়ে বহুবচন হয়। যেমনঃ
মানুষ মরণশীল।
বাঙালি সব পারে।

আরও পড়ুনঃ বিসিএস প্রস্তুতিঃ বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম সম্পর্কে জানা অজানা তথ্য
লিঙ্গ
বাংলা ব্যাকরণের একটি আলোচ্য বিষয় লিঙ্গ যাকে ইংরেজিতে Gender বলা হয়। আজকে আমরা লিঙ্গ নিয়ে আলোচনা করব।
লিঙ্গ কাকে বলে? লিঙ্গ কত প্রকার ও কি কি?
লিঙ্গ শব্দের অর্থ চিহ্ন বা লক্ষণ। কোনটি স্ত্রী, কোনটি পুরুষ, কোনটি স্ত্রী-পুরুষ উভয়ই এবং কোনটি অপ্রাণীবাচক লিঙ্গের ধারণা থেকে আমরা তাই বুঝতে পারি।
শব্দের যে চিহ্ন দ্বারা পুরুষ, স্ত্রী বা অন্য কিছু বুঝায়, তাকে লিঙ্গ বলে। যেমন– মা, বাবা, ছেলে, মেয়ে, শিশু, চেয়ার ইত্যাদি।
লিঙ্গ প্রধানত ৪ প্রকার। যথাঃ
ক. পুংলিঙ্গ
খ. স্ত্রীলিঙ্গ
গ. উভয়লিঙ্গ
ঘ. ক্লীবলিঙ্গ
পুং লিঙ্গ
যেসব শব্দ দ্বারা পুরুষ জাতিকে বুঝায়, তাকে পুংলিঙ্গ বলে। যেমন- শিক্ষক, বালক, রাজা, দাদা, পিতা, বন্ধু, ভিখারি, নদ,বাবা,পুত্র ইত্যাদি।
স্ত্রী লিঙ্গ
যেসব শব্দ দ্বারা স্ত্রী জাতিকে বুঝায়, তাকে স্ত্রীলিঙ্গ বলে। যেমন- মা, কন্যা,বোন, ভাবী, মেয়ে, দাদী, রানী, সখী, স্ত্রী, জেলেনী ইত্যাদি।
উভয় লিঙ্গ
যেসব শব্দ দ্বারা স্ত্রী-পুরুষ উভয়কেই বুঝায়, তাকে উভয়লিঙ্গ বলে। যেমন- শিশু, গরু,মন্ত্রী, সাথী, মানুষ, সন্তান, পাখি, ইত্যাদি।
ক্লীব লিঙ্গ
যেসব শব্দ দ্বারা পুরুষ কিংবা স্ত্রী কোনটাই বুঝায় না বরং অচেতন পদার্থকে বুঝায় , তাকে ক্লীবলিঙ্গ বলে। যেমন- বই, ফুল, টুপি, দালান, জামা,ঘর, কলম, টেবিল ইত্যাদি।
পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দকে ২টি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমনঃ
১. পতি ও পত্নীবাচক (পুরুষ ও স্ত্রীবাচক) শব্দ : বাবা-মা, চাচা-চাচি, কাকা-কাকি, জেঠা-জেঠি, দাদা-দাদি, নানা-নানি, আব্বা-আম্মা,নন্দাই-ননদ, দেওর-জা, ভাই-ভাবি/বৌদি, ইত্যাদি।
২. সাধারণ পুরুষ ও স্ত্রী অর্থে পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দ : ছাত্র- ছাত্রী, শিক্ষক- শিক্ষিকা, খোকা-খুকি, পাগল-পাগলি, বামন-বামনি, ভেড়া-ভেড়ী, মোরগ-মুরগি, বালক-বালিকা, দেওর-ননদ, ইত্যাদি।
লিঙ্গ পরিবর্তনের নিয়ম
সাধারণত তিন ভাবে ‘পুংলিঙ্গ’ শব্দকে ‘স্ত্রীলিঙ্গ’ শব্দে রূপান্তর করা যায়। যথাঃ
(ক) পুংলিঙ্গ শব্দের পরে আ, ঈ, ইকা, নী, ইনী, আনী, বতী, মতী ইত্যাদি স্ত্রী প্রত্যয় যোগ করে।
(খ) পুরুষ বা স্ত্রীবাচক ভিন্ন শব্দ বসিয়ে।
(গ) স্ত্রী বা পুরুষবাচক শব্দ আগে বসিয়ে।
- অ-কারান্ত পুংলিঙ্গের সঙ্গে “আ” প্রত্যয় যোগে স্ত্রীলিঙ্গ হয়।
যেমনঃ-

মহাশয় > মহাশয়া, প্রিয় > প্রিয়া, আর্য > আর্যা, জ্যেষ্ঠ > জ্যেষ্ঠা, বিপুল > বিপুলা, চতুর > চতুরা, দীন > দীনা।
- অ-কারান্ত পুংলিঙ্গ এর সঙ্গে “ঈ” প্রত্যয় যোগে স্ত্রী লিঙ্গ হয়।
যেমনঃ-
রজক > রজকী,সিংহ > সিংহী, গোপ > গোপী, গৌর > গৌরী, তরুণ > তরুণী, নর > নারী, হংস > হংসী।
- অ, আ, এ, ই, ঈ-কারান্ত পুংলিঙ্গের সঙ্গে নি, আনি, ইনি, প্রত্যয় যোগ করে স্ত্রী লিঙ্গ করা যায়।
যেমনঃ-
রুদ্র > রুদ্রাণী , ভব > ভবানী, গোপ > গোপিনী, বন > বনানী, মাতুল > মাতুলানী, মালি > মালিনী, ক্ষত্রিয় > ক্ষত্রিয়ী।
- পুংলিঙ্গ শব্দের আগে স্ত্রীলিঙ্গ শব্দ যুক্ত করেও লিঙ্গ পরিবর্তন করা যায়।
যেমনঃ-
কবি- মহিলা কবি, ডাক্তার- মহিলা ডাক্তার,গুরু > গুরু মা, সভ্য- মহিলা সভ্য, কর্মী- মহিলা কর্মী, শিল্পী- মহিলা শিল্পী/ নারী শিল্পী, সৈন্য- নারী সৈন্য/ মহিলা সৈন্য, পুলিশ- মহিলা পুলিশ।
- শব্দের শেষে পৃথক শব্দ যোগ করে।
যেমনঃ-
বোনপো- বোনঝি, ঠাকুরপো- ঠাকুরঝি, ঠাকুর দাদা/ ঠাকুরদা- ঠাকুরমা, গয়লা- গয়লা বউ, জেলে- জেলে বউ।
- দুটি ভিন্ন ভিন্ন শব্দের মাধ্যমে পুরুষ ও স্ত্রী বাচক বোঝানো যেতে পারে।
যেমনঃ-
বর-কনে, দুলহা-দুলাইন/ দুলহিন, বেয়াই-বেয়াইন, তাঐ-মাঐ,বাবা-মা, ভাই-বোন, কর্তা-গিন্নী, ছেলে-মেয়ে, সাহেব- বিবি, জামাই-মেয়ে, বাদশা-বেগম, শুক-সারী।
নিত্য স্ত্রীবাচক শব্দ
কতগুলো শব্দ নিত্য স্ত্রীবাচক অর্থাৎ এগুলো সর্বদাই স্ত্রীবাচক হয় এবং এদের কোন পুরুষবাচক শব্দ নেই।
যেমন- সতীন, সৎমা, এয়ো, দাই, সধবা, ইত্যাদি।
বিশেষ নিয়মে সাধিত স্ত্রীবাচক শব্দ
১.পুরুষবাচক শব্দের শেষে ‘তা’ হলে, সেগুলোর শেষে ‘ত্রী’ হয়। যেমনঃ- ধাতা-ধাত্রী, নেতা-নেত্রী, কর্তা-কর্ত্রী, শ্রোতা- শ্রোত্রী।
২.পুরুষবাচক শব্দের শেষে অত, বান, মান, ঈয়ান থাকলে স্ত্রীবাচক শব্দে যথাক্রমে অতী, বতী, মতী, ঈয়সী হয়। যেমনঃ- সৎ-সতী, মহৎ-মহতী, গুণবান-গুণবতী, রূপবান-রূপবতী, শ্রীমান-শ্রীমতি, বুদ্ধিমান-বুদ্ধিমতী, গরীয়ান-গরিয়সী।
৩.বিশেষ নিয়মে গঠিত স্ত্রীবাচক শব্দ। যেমনঃ- বন্ধু-বান্ধবী, দেবর- জা, শিক্ষক- শিক্ষয়িত্রী, স্বামী-স্ত্রী, সম্রাট- সম্রাজ্ঞী, রাজা-রাণী, যুবক-যুবতী, নর-নারী পতি-পত্নী, সভাপতি-সভানেত্রী।
৪৬ তম বিসিএস বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ সালের জানুয়রারি মাসে প্রকাশিত হতে পারে। সঠিক সময়ে বাংলা ব্যাকরণ সহ সকল বিষয়ের জন্য বিসিএস প্রস্তুতি শুরু করুন।
