বাংলা ব্যাকরণে বাক্যতত্ত্বের অন্যতম আলোচ্য বিষয় হল পদ ও পদ-সংশিষ্ট আলোচনা। বাংলা ব্যাকরণের প্রাণই হলো এই পদ প্রকরণ। তাই আজকে আমরা পদ প্রকরণ নিয়ে আলোচনা করব।
পদ প্রকরণ কাকে বলে?
ব্যাকরণের যে অংশ শব্দ ও শব্দের গঠন, শব্দের শ্রেণী বিভাগ, পদ, পদের পরিচয়, প্রত্যয়, বচন, শব্দরূপ কারক, সমাস, ক্রিয়া, ক্রিয়ার কাল, শব্দের ও পদের ব্যুৎপত্তি আলোচনা করে তাকে পদ প্রকরণ বলে।
পদ কাকে বলে?
বাংলা ব্যাকরণ অনুসারে,অর্থবোধক বর্ণ বা বর্ণসমষ্টি দিয়ে গঠিত কোনো শব্দ বাক্যে ব্যবহৃত হলে তাকেই পদ বলে। অর্থাৎ যে শব্দ বা ধাতু বিভক্তি যুক্ত হয়ে বাক্যে প্রয়োগের উপযোগী হয়, তাকেই পদ বলে। শব্দ বা ধাতুর সাথে বিভক্তি যুক্ত করলে পদের সৃষ্টি হয়। বিভক্তি যুক্ত শব্দই আসলে পদ। যেমনঃ রহিম স্কুলে যায়। এই বাক্যের প্রতিটি শব্দই এক একটি পদ।
আবার, দুঃসাহসী অভিযাত্রীরা মানুষের চিরন্তন কল্পনার রাজ্য চাঁদের দেশে পৌঁছেছেন এবং মঙ্গলগ্রহেও যাওয়ার জন্য তাঁরা প্রস্তুত হচ্ছেন। উপর্যুক্ত বাক্যটিতে ‘রা’ (অভিযাত্রী+রা), ‘এর’ (মানুষ+এর), ‘র’ (কল্পনা+র), ‘এ’ (মঙ্গলগ্রহ+এ) প্রভৃতি চিহ্নগুলোকে বিভক্তি বলা হয়। আর বাক্যে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি বিভক্তিযুক্ত শব্দ মাত্রই এক একটি পদ।
পদ কত প্রকার ও কি কি?
পদ প্রধানত ২ প্রকার। যথাঃ
১.সব্যয় পদ ও
২.অব্যয় পদ
সব্যয় পদঃ যে পদের পরিবর্তন হয় তাকে সব্যয় পদ বলে। অর্থাৎ অব্যয় পদ ব্যতীত বাকি সমস্ত পদই হচ্ছে সব্যয় পদ। সব্যয় পদকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ-
১. বিশেষ্য
২. বিশেষণ
৩. সর্বনাম
৪. ক্রিয়া
আরও পড়ুনঃ বাক্য কাকে বলে? গঠন ও অর্থ অনুসারে বাক্যের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানুন
বিশেষ্য পদ
কোন কিছুর নামকেই বিশেষ্য পদ বলে। বিশেষ্য পদকে আবার নামপদ ও বলা যায়। বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত যে সমস্ত পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, বস্তু, জাতি, সমষ্টি, স্থান, কাল, ভাব, কর্ম বা গুণের নাম বোঝায়, তাকে বিশেষ্য পদ বলে।
বিশেষ্য পদ ৬ প্রকার। যথাঃ-
১. নামবাচক/সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য পদঃ যে বিশেষ্য পদ দ্বারা ব্যক্তি, ভৌগোলিক স্থান বা সংজ্ঞা, গ্রন্থের নাম ইত্যাদি বুঝায় তাকে নামবাচক বিশেষ্য বলে। যেমনঃ ঢাকা, দিল্লি, নজরুল ইসলাম,তাজিংডং(বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ),আল-কুরআন, বাইবেল ইত্যাদি সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য।
২.বস্তুবাচক বিশেষ্য পদঃ যে বিশেষ্য পদ দ্বারা যেকোনো বস্তু বা দ্রব্যকে বুঝায় তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য বলে। যেমনঃ মাটি, পানি, চিনি, লবণ, সোনা, রুপা ইত্যাদি বস্তুবাচক বিশেষ্য।
৩.জাতিবাচক বিশেষ্য পদঃ যে বিশেষ্য পদ দ্বারা এক জাতীয় প্রাণী বা পদার্থের সাধারণ নাম ইত্যাদি বুঝায় তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য বলে। যেমনঃ মুসলিম, হিন্দু, গরু, পাখি ইত্যাদি জাতিবাচক বিশেষ্য।
৪.সমষ্টিবাচক বিশেষ্য পদঃ যে বিশেষ্য পদ দ্বারা কিছুসংখ্যক ব্যক্তি বা প্রাণীর সমষ্টি বুঝায় তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমনঃ সভা, জনতা, সমিতি, বাহিনী, দল ইত্যাদি সমষ্টিবাচক বিশেষ্য।
৫.গুণবাচক বিশেষ্য পদঃ যে বিশেষ্য পদ দ্বারা কোন বস্তুর দোষ বা গুণকে বুঝায় তাকে গুণবাচক বিশেষ্য পদ বলে। সততা, ভদ্রতা, সাধুতা,শালীনতা, মহত্ব, দয়া ইত্যাদি গুণবাচক বিশেষ্য।
৬.ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য পদঃ যে বিশেষ্য পদ দ্বারা ক্রিয়ার ভাব বা কাজের ভাব প্রকাশ করে তাকে ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য পদ বলে। যেমনঃ যাওয়ার কাজ -গমন। দেখার কাজ-দর্শন ইত্যাদি ।
আরও পড়ুনঃ শব্দ কাকে বলে? শব্দ কত প্রকার ও কি কি?
বিশেষণ পদ
যেসব শব্দ কোনো পদের গুণ, পরিমাণ, অবস্থা, সংজ্ঞা, ধর্ম ইত্যাদি বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়, তাকে বিশেষণ পদ বলে। বিশেষণ পদ বলতে বুঝায় যা কোন কিছুকে বিশিষ্ট করে বা ফুটিয়ে তোলে। যেমনঃ নীল আকাশ, ফুলটি সুন্দর ইত্যাদি।
বিশেষণ পদকে দুইভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ-
১. নাম বিশেষণ
২.ভাব বিশেষণ
নাম বিশেষণঃ যে বিশেষণ বিশেষ্য ও সর্বনাম পদকে বিশেষিত করে তাকে নাম বিশেষণ বলে। অর্থাৎ বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের দোষ, গুণ, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে।
বিশেষ্যের বিশেষণঃ চলন্ত গাড়ি
সর্বনামের বিশেষণঃ সে গুণবান
নাম বিশেষণ বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। যথাঃ-
১. রূপবাচক: নীল আকাশ, সবুজ প্রকৃতি।
২. গুণবাচক: চৌকস লোক, দক্ষ কারিগর, ঠাণ্ডা হাওয়া।
৩. অবস্থাবাচক: চলন্ত ট্রেন, তাজা মাছ, রোগা ছেলে।
৪. সংখ্যাবাচক : হাজার লোক, একশ টাকা।
৫. ক্রমবাচক : দশম শ্রেণি, সত্তর পৃষ্ঠা, প্ৰথমা কন্যা ।
৬. পরিমাণবাচক : বিঘাটেক জমি, পাঁচ শতাংশ ভূমি, হাজার টনী জাহাজ, এক কেজি চাল
দু কিলোমিটার রাস্তা।
৭. অংশবাচক : অর্ধেক সম্পত্তি, ষোল আনা দখল, সিকি পথ
৮. উপাদানবাচক: বেলে মাটি, মেটে কলসি, পাথুরে মূর্তি।
৯. প্রশ্নবাচক : রাস্তা কতদূর? কেমন অবস্থা?
১০.নির্দিষ্টতাজ্ঞাপক : সেই লোক, ষোলই ডিসেম্বর ।
ভাব বিশেষণঃ যে পদ অন্য পদকে বিশেসভাবে প্রকাশ করে তাকে ভাব বিশেষণ বলে। ভাব বিশেষণকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
১. ক্রিয়া বিশেষণঃ যে বিশেষণ ক্রিয়া সংঘটনের ভাব, কাল বা রূপ নির্দেশ করে তাই ক্রিয়া বিশেষণ । যেমনঃ দূর দূর কুয়াশাচ্ছন্ন রাস্তা। আমরা এখন খেলব।
২. বিশেষণের বিশেষণঃ যে বিশেষণ নাম বিশেষণ বা ক্রিয়া বিশেষণকে বিশেষিত করে তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে। যেমনঃ খুব গরম পড়ছে।
৩.অব্যয়ের বিশেষণঃ যে বিশেষণ অব্যয়ের অর্থকে বিশেষিত করে তাকে অব্যয়ের বিশেষণ বলে। যেমনঃ ঠিক ওপরে, শতাধিক ইত্যাদি।
বিশেষণের অতিশায়ন
বিশেষণ যখন দুই বা ততোধিক পদের মধ্যে গুণ, দোষ, অবস্থা, পরিমাণ প্রভৃতি বিষয়ে তুলনায় একের উৎকর্ষ বা অপকর্ষ বুঝিয়ে থাকে, তখন তাকে বিশেষণের অতিশায়ন বলে। যেমন : যমুনা একটি দীর্ঘ নদী, পদ্মা দীর্ঘতর, কিন্তু মেঘনা বাংলাদেশের দীর্ঘতম নদী।
আরও পড়ুনঃ ধ্বনি কাকে বলে? কত প্রকার ও কি কি?
প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিতে এখনই এনরোল করুন।
সর্বনাম পদ
বাক্যে বিশেষ্যের পরিবর্তে যেসব শব্দ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে। হস্তী প্রাণিজগতের সর্ববৃহৎ প্রাণী। তার শরীরটি যেন বিরাট এক মাংসের স্তূপ। এখানে তার শব্দটি হচ্ছে সর্বনাম।
সর্বনামের প্রকারভেদ
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত সর্বনাম সমূহকে নিম্নলিখিত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।
১। ব্যক্তিবাচক বা পুরুষবাচকঃ আমি, তুমি, সে
২। আত্মাবাচকঃ স্বয়ং, নিজে, খোদ, আপনি
৩। সামীপ্যবাচকঃ এ, এই এরা, ইহারা, ইনি
৪। দূরত্ববাচকঃ ঐ, ঐ সব, সব
৫। সাকল্যবাচকঃ সব, সকাল, সমুদয়, তাবৎ
৬। প্রশ্নবাচকঃ কে, কি, কী, কোন, কাহার, কার
৭। অনির্দিষ্টতাজ্ঞাপকঃ কোন, কেহ, কেউ, কিছু
৮। ব্যতিহারিকঃ আপন, আপনি, নিজে নিজে, আপসে, পরস্পর
৯। সংযোগজ্ঞাপকঃ যে, যিনি, যার, যাঁরা, যাহারা
১০। অন্যাদিবাচকঃ অন্য অপর পর ইত্যাদি ।
ক্রিয়াপদ
যে পদ দ্বারা কোন কার্য বা কাজ সম্পাদান করা বুঝায়, তাকে ক্রিয়াপদ বলে।
ক্রিয়াপদের প্রকারভেদ
ভাব প্রকাশের উপর ভিত্তি করে ক্রিয়াপদ দুই প্রকার যথা:
১। সমাপিকা ক্রিয়া: যে‘ ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের পরিসমাপ্তি জ্ঞাপিত হয় তাকে সমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন: আমি ভাত খাচ্ছি।
২। অসমাপিকা ক্রিয়া: যে ক্রিয়া দ্বারা বাক্যের পরিসমাপ্তি ঘটে না তাকে অসমাপিকা ক্রিয়া বলে। যেমন: আমি ভাত খেয়ে……
প্রকৃতির দিক থেকে ক্রিয়াপদ চার প্রকার · যথা:
১. যৌগিক ক্রিয়া ২.প্রযোজক ক্রিয়া ৩. নামধাতুর ক্রিয়া ৪. মিশ্র ক্রিয়া।
যৌগিক ক্রিয়া:
একটি সমাপিকা ক্রিয়া ও একটি অসমাপিকা ক্রিয়া মিলে যৌগিক ক্রিয়া গঠিত হয়। বিভিন্ন অর্থে যৌগিক ক্রিয়ার ব্যবহার হলঃ
(ক)অভ্যন্ততা অর্থে: শিক্ষায় মন সংস্কারমুক্ত হয়ে থাকে।
(খ) তাগিদ দেওয়া অর্থে: ঘটনা শুনে রাখ।
(গ) নিরন্তরতা অর্থে: তিনি বলতে লাগলেন।
(ঘ) আকস্মিকতা অর্থে: সাইরেন বেজে উঠল, ছেলেরা হেসে ফেলল।
(ঙ) ক্রমশ অর্থে: চা জুড়িয়ে যাচ্ছে, কেমন যেন মনমরা হয়ে পড়েছি।
(চ) সমাপ্তি অর্থে: এখন শুয়ে পড়।
(ছ) ব্যাপ্তি অর্থে: কথাটা ছড়িয়ে পড়েছে।
(জ) পরীক্ষা অর্থে: লবণটা চেখে দেখ, কষ্টিপাথরে সোনাটা ঘষে নাও
(ঝ) সামর্থ অর্থে: এসব কথা আমার সহ্য হয়ে ওঠে না।
(ঞ) অবিরাম অর্থে: খোকা কাঁদতে লাগল।
প্রযোজক ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়া একজনের চালনায় অন্য কর্তৃক অনুষ্ঠিত হয়, তাকে প্রযোজক ক্রিয়া বলে। যেমনঃ তুমি খোকাকে কাঁদিও না, মা শিশুকে চাঁদ দেখাচ্ছেন।
নামধাতুর ক্রিয়াঃ নাম শব্দ অর্থাৎ বিশেষ্য, বিশেষণ, অব্যয় প্রভৃতি শব্দ কখনও কখনও প্রত্যয়যোগে, কখনওবা প্রত্যয় যুক্ত না হয়ে ক্রিয়ারূপে ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের ক্রিয়ার মূলকে নাম ধাতু বলে। যেমন— জুতা > জুতানো, বাঁকা>বাঁকানো।
মিশ্র ক্রিয়াঃ বিশেষ্য, বিশেষণ বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়ের সাথে অন্য কোনো ক্রিয়াপদ যুক্ত হলে যে ক্রিয়াপদ গঠিত হয় তাকে মিশ্র ক্রিয়াপদ বলে। যেমন— বেত + মারছে = বেত মারছে।
এছাড়াও রয়েছে,
সকর্মক ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়ার কর্ম পদ আছে তাকে সকর্মক ক্রিয়া। যেমনঃ বাবা আমাকে একটি কলম কিনে দিয়েছেন।
অকর্মক ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়ার কর্ম নেই, তাই অকর্মক ক্রিয়া। যেমনঃ মেয়েটি হাসে। কি ‘হাসে’ বা ‘কাকে হাসে’ প্রশ্ন করলে কোনো উত্তর হয় না। কাজেই ‘হাসে’ ক্রিয়াটি সকর্মক ক্রিয়া।
দ্বিকর্মক ক্রিয়াঃ যে ক্রিয়ার দুটো কর্মপদ থাকে, তাকে দ্বিকর্মক ক্রিয়া বলে। যেমনঃ আমাকে দুই টাকার নোট দাও।
আরও পড়ুনঃ সন্ধি কাকে বলে, কত প্রকার ও কি কি?
৪৭তম বিসিএস পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিতে আজই এনরোল করুন।
অব্যয় পদ
লিঙ্গ, বচন, পুরুষ ও বিভক্তিতে যে পদের কখনও কোনো পরিবর্তন হয় না, তাকেই অব্যয় পদ বলে। অব্যয় ছাড়া সব পদেরই লিঙ্গ, বচন, পুরুষ ও বিভক্তিতে পরিবর্তন দেখা দেয়।
যেমন—বাঃ! কী মনোরম দৃশ্য। দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি? তোমার কিন্তু অবশ্যই যাওয়া চাই। এখানে বাঃ, বিনা, কিন্তু, ইত্যাদি পদগুলির দ্বারা কোনো না কোনো ভাব প্রকাশ পেয়েছে। এই পদগুলি দুটি বাক্যের মধ্যে সম্বন্ধ ঘটিয়েছে। এই পদগুলির কোনো পরিবর্তন হয় না।
অব্যয় পদের প্রকারভেদ
অব্যয় প্রধানত চার প্রকার। যথাঃ
১. সমুচ্চরী অব্যয়
২. অনুসর্গ বা পদান্বয়ী অব্যয়
৩. অনন্বয়ী অব্যয়
৪. অনুকার বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয়
১. সমুচ্চয়ী অব্যয়ঃ যে অব্যয় পদ একটি বাক্যের সঙ্গে অন্য একটি বাক্যের অথবা বাক্যস্থিত একটি পদের সঙ্গে অন্য একটি পদের সংযোজন, বিয়োজন বা সংকোচন ঘটায়, তাকে সমুচ্চয়ী অব্যয় বা সমন্ধবাচক অব্যয় বলে।
সমুচ্চয়ী অব্যয় বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে।
ক. সংযোজক অব্যয়ঃ ও, তাই, আর অধিকন্তু, সুতরাং। যেমনঃ তুমি ও আমি সেখানে যাব।
খ. বিয়োজক অব্যয়ঃ বা, অথবা, নতুবা, না হয়,কিংবা, কিন্তু, নয়তো। যেমনঃ লেখাপড়া কর নতুনা ফেল করবে।
গ. সংকোচক অব্যয়ঃ অথচ, বরং কিন্তু । যেমনঃ তুমি, সে ও আমি সেখানে যাব = আমরা সেখানে যাব। এ বাক্যে ‘ও’ সংকোচক অব্যয়।
২. অনন্বয়ী অব্যয়: বাক্যের অন্য পদের সঙ্গে কোনো সম্বন্ধ না রেখে স্বাধীন ভাবে নানাবিধ ভাব প্রকাশে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণ: সংশয়ে সংকল্প সদা টলে পাছে লোকে কিছু বলে। মরি মরি! কী সুন্দর প্রবাতের রূপ? ছি ছি তুমি এত নীচ।
৩. অনুসর্গ অব্যয়: বিশেষ্য ও সর্বনাম পদের বিভক্তির ন্যায় বসে কারকবাচকতা প্রকাশ করে। উদাহরণ: ওকে দিয়ে এ কাজ হবে না।
৪. অনুকার অব্যয়: অব্যক্ত রব শব্দ বা ধ্বনির অনুকরণে গঠিত হয়। উদাহরণ: বজ্রের ধ্বনি—কড়কড়। মেঘের গর্জন—গুড়গুড়। বৃষ্টির তুমুল শব্দ—ঝমঝম। ঘোড়ার ডাক—চিঁহি চিহি
পদ ও পদের প্রকারভেদ নিয়ে আজকে এই পর্যন্তই। যা বিসিএস, প্রাইমারি, নিবন্ধন সহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। হেলো বিসিএস এর সাথে থাকুন। ধন্যবাদ।